ঢাকা , রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫ , ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কেউ শুনল না বাবুই পাখির কান্না , শতাধিক ছানা খুন

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ২৮-০৬-২০২৫ ০৯:২৮:৪৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২৮-০৬-২০২৫ ০৯:২৮:৪৯ অপরাহ্ন
কেউ শুনল না বাবুই পাখির কান্না , শতাধিক ছানা খুন ​ছবি: সংগৃহীত
ঝালকাঠি সদর উপজেলার পূর্ব গুয়াটন এলাকায় তালগাছ কেটে শতাধিক বাবুই পাখির ছানা হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

শুক্রবার (২৭ জুন) বিকালে একদল পাষণ্ড ব্যক্তি এলাকার একটি বিশাল তালগাছ কেটে ফেলে। গাছটিই ছিল শতাধিক বাবুই পাখির বাসা ও প্রজননের একমাত্র নিরাপদ আশ্রয়স্থল। কেটে ফেলা গাছের নিচে আহত ও মৃত পাখির ছানা ও ভাঙা বাসাগুলো পড়ে থাকে। 

স্থানীয়রা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলছেন, এ ব্যাপারে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে মামলা করা হবে। 

জানা যায়, গুয়াটন গ্রামের মোবারেক আলী ফকিরের মালিকানাধিন জমির পাশের সরকারি সড়কের তালগাছটিতে দীর্ঘদিন ধরে বাবুই পাখির নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত ছিল। এ গাছে অনেক বাবুই পাখির বাসা, ডিম ও ছানা ছিল। গাছটি মোবারেক আলী ফকির গাছটি ফারুক ব্যাপারীর কাছে বিক্রি করেন। এরপর ফারুক ব্যাপারী কয়েকজন শ্রমিক (কুঠারি) নিয়ে গাছটি কেটে ফেলেন। 

গাছ কাটার সময় স্থানীয় কয়েকজন যুবক ছুটে গিয়ে গাছটি না কাটার অনুরোধ করেন। এমনকি গাছের বাজারমূল্য পরিশোধ করে সেটি সংরক্ষণ করতে চাইলেও তারা কোনো কথায় কর্ণপাত করেননি। তালগাছটি কাটার ফলে প্রায় পাঁচ শতাধিক ছানা ও ডিম ধ্বংস হয়ে যায়। এই ঘটনায় এলাকাবাসী মর্মাহত হয়ে পড়েন।  তাঁরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। 

স্থানীয় পরিবেশ সচেতন নাগরিক সাব্বির ও জাহিদুল বলেন, এই গাছ শুধু একটি গাছ নয়, এটি একটি প্রাণবৈচিত্র্যের কেন্দ্র ছিল। গাছে গাছে পাখির কিচিরমিচির, ডিম, ছানা-সব মিলে এটি ছিল প্রাণের উৎস। যারা এটি কেটেছে, তারা প্রকৃতির বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে। তারা জানান, গাছ কাটার কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিরা শুধু কথা অমান্য করেই ক্ষান্ত হননি, বরং চরম দুর্ব্যবহার করেছেন প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে। একপর্যায়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ডেকে আনা হলেও ততক্ষণে সব শেষ। 

ঘটনার পর শনিবার (২৮ জুন) সকালে স্থানীয় প্রশাসন ও বন বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। শেখেরহাট ইউনিয়নের গুয়াটন ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মাসুদুর রহমান বলেন, আমি গাছ কাটার পর ঘটনাটি জানতে পারি। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি বহু পাখির বাসা নষ্ট হয়েছে। বিষয়টি ইউএনও ম্যাডামকে জানানো হয়েছে এবং তার নির্দেশে গাছটি জব্দ করা হয়েছে।

ঝালকাঠি সদর উপজেলার ইউএনও ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, উপজেলা প্রশাসন এবং বন বিভাগের কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। গাছ কাটার ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে পৃথক মামলা দায়েরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এদিকে গাছ কাটায় জড়িতদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বাংলা স্কুপ/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ